কুড়িগ্রামে ধর্মান্তরিত বীর মুক্তিযোদ্ধা হোসেন আলী হত্যা মামলায় ৬ জেএমবি সদস্যকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছে কুড়িগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ আদালত।
আসামিরা হলেন, জাহাঙ্গীর ওরফে রাজিব ওরফে রাজিব গান্ধী, রিয়াজুল ইসলাম মেহেদী, গোলাম রব্বানী, হাসান ফিরোজ ওরফে মোখলেছ, মাহবুব হাসান মিলন ওরফে হাসান ওরফে মিলন ও আবু নাসির ওরফে রুবেল।
বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টায় কুড়িগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ মো. আব্দুল মান্নান জনাকীর্ণ আদালতে এ রায় ঘোষণা করেন। এ সময় আসামি রিয়াজুল ইসলাম মেহেদী ছাড়া বাকি ৫জন আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
রায়ে হত্যা মামলায় ৩০২/৩৪/১০৯ ধারায় ৬ আসামিকে ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিতের আদেশ দেন। এছাড়াও একই আদালত বিস্ফোরক আইনের ৩ ধারায় আসামি জাহাঙ্গীর ওরফে রাজিব ওরফে রাজিব গান্ধী, রিয়াজুল ইসলাম মেহেদী ও গোলাম রব্বানীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে এক বছরের জেল এবং একই আইনের ৪ ধারায় ওই ৩ আসামিকে ২০ বছর কারাদণ্ড ও ২৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ৬ মাসের হাজতবাসের আদেশ দেন।
এর আগে আদালত পাড়ায় কড়া পুলিশি নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। প্রতিটি মানুষকে সার্চ করে তারপর আদালত চত্বরে প্রবেশ করতে দেয়া হয়। বিকেল পৌনে তিনটার দিকে কুড়িগ্রাম জেল কারাগার থেকে আসামিদের কঠোর নিরাপত্তার বলয়ে আদালতে হাজির করা হয়। রায় ঘোষণার পর পর আসামিদের কুড়িগ্রাম কারাগারে ফেরৎ পাঠানো হয়। কুড়িগ্রামের এই আলোচিত হত্যা মামলায় রায় ঘোষণা হবে এ খবর পেয়ে মিডিয়া কর্মীরা সকাল ১১টা থেকে আদালত চত্বরে অবস্থান নেয়। বার বার সময় পরিবর্তন হয়ে বিকাল ৩টায় এ জলাসে বসেন বিচারক।
মামলায় সরকারি পক্ষের আইনজীবী ও পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট এস.এম আব্রাহাম লিংকন আদেশের কথা নিশ্চিত করে জানান, ২০১৬ সালের ২২ মার্চ কুড়িগ্রাম শহরের গাড়িয়াল পাড়া এলাকায় প্রাত ভ্রমণের সময় ধর্মান্তরিত খ্রিস্টান মুক্তিযোদ্ধা হোসেন আলীকে কুপিয়ে হত্যা করে ককটেল ফাঁটিয়ে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করে পালিয়ে যায় হত্যাকারীরা।
এ ব্যাপারে একটি হত্যা ও একটি বিস্ফোরক আইনে মামলা দায়ের করা হয়। পরবর্তীতে ৭ নভেম্বর কুড়িগ্রাম সদর থানা পুলিশ ১০ জেএমবি সদস্যকে অভিযুক্ত করে কুড়িগ্রাম চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে চার্জশীট জমা দেয়া হয়।